বসন্ত বাতাসে
আপনারা হয়তো notice করেছেন যে ইদানিং বিকেলে খুব সুন্দর বসন্তের দক্ষিণা হওয়া বইছে। হেবি লাগছে।
বসন্ত অনেকাংশে gestation period এর মতন। সে হুট করে আসে না। মন্থর শীত এবং চ্যাটচ্যাটে গরমের মাঝে চুপি চুপি আসে। কোনো পুরোনো লাজুক প্রেমিকার হঠাৎ শহরে ফেরার মতন।
যখন ছাত্র ছিলাম - বসন্ত একটি মনোরম সময় ছিল। শীতের ফুর্তি শেষ। পরের অধ্যায়ের প্রস্তুতি শুরু। তার মাঝের শান্ত সুঠাম সময়।
অনেক বসন্তের বিকেল কাটিয়েছি - হোস্টেলের ব্যালকনি তে হাওয়া খেয়ে, চা দোকানে হাওয়া খেয়ে, স্কুটার চালিয়ে হাওয়া খেয়ে। তখন মনে ছিল শুধু প্রত্যাশা। কি আছে ভবিষ্যতে। ভবিষ্যতে এসে আজকে খেই হারিয়ে ফেলেছি।
লগ্নজিতা বলে গেছে - "এই বসন্তে অনেক জন্ম আগে, তোমায় প্রথম দেখেছিলেম আমি"। বসন্তের হওয়া তেই প্রেম আছে। আর আছে - আত্ম বিশ্লেষণ (self-reflection)। আপনি ভাবেন। গভীর ভাবে ভাবেন। সময়টা আপনাকে ভাবায়। আসলে পলাশে রং ধরার আগে যদি আপনার মনে ভাবের সঞ্চার হয়, তখনই বুঝবেন - বসন্ত এসে গেছে।
বসন্ত মনটাকে কিরম একটা করে দেয়! ভাবী - কি করছি জীবনে... কি কি করলাম না জীবনে... শৈল্পিক দৃষ্টিটা এক ধাপে অনেকটা প্রখর হয়ে যায়।
অফিসের জানালার বাইরে ধূসর বিকেলের মধুর বাতাসে গাছের পাতা নড়া দেখে তন্ময় হয়ে পড়তেই, compliance er তন্ময় এসে বলে "দাদা, পরশু আমার বিয়ে। কাকু-কাকিমাকে নিয়ে আসবেন কিন্তু মনে করে।"
শহরও সাজছে পাল্লা দিয়ে। বইমেলার কনে, সরস্বতী পুজোর ঘটে, কুলের আচারে, শাড়ির ভাঁজে, প্রেম দিবসের ভিড়ে - সব মিলিয়ে শহর সরগরম। কিন্তু আপনি তো সেই কোন শূন্যতায় আটকে রয়েছেন - আপনি নিজেও জানেন না। এখন বসন্তের হাওয়া গায়ে লাগে যখন ৬ টার সময় আপনি অফিস থেকে বেরন। গেট থেকে গাড়ি অবধি। ওইটুকুই আপনার আলিঙ্গন, বসন্তের সাথে। ওইটুকুই সুখ। ওইটুকুই আত্ম বিশ্লেষণ।
একটু প্রেম হলে মন্দ হতো না।